যার মাধ্যমে বোঝা যায় কে তাঁর নির্দেশ মেনে চলে আর কে অবাধ্য হয়। এই পরীক্ষা তিনি বিভিন্ন উপায়ে নেন, কখনো এক সৃষ্টিকে আরেক সৃষ্টির সাথে যুক্ত করে।
মানুষের এই পৃথিবীতে অবস্থান মূলত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। আল্লাহ তাঁর অনুগামী এবং সীমা লঙ্ঘনকারীদের পৃথক করতে এই পরীক্ষা প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো শয়তান, যা জিন জাতির অন্তর্ভুক্ত। শয়তানের ক্ষমতা ও শক্তি মানুষের থেকে আলাদা।
যখন মানুষ আল্লাহ থেকে দূরে সরে যায়, তখন শয়তান তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। শয়তান ভুল কাজকে মানুষের কাছে সঠিক হিসেবে উপস্থাপন করে এবং ধীরে ধীরে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে তার দলে নিয়ে যায়। এর পরিণতি হয় উভয়ের জাহান্নাম।
কিন্তু যখন মানুষ আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে এবং প্রতিটি কাজে আল্লাহর কাছে শয়তানের বিপক্ষে সাহায্য প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করেন। এর ফলে পরীক্ষায় শয়তান পরাজিত হয়, আর মানুষ জান্নাত লাভ করে।
মাসীহ দাজ্জাল কে?
মাসীহ দাজ্জাল (المسيح الدجل) দুটি আরবি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। প্রথম শব্দ মাসীহ যা এসেছে আরবি শব্দ মাসাহা (مَسَحَ) থেকে। এর অর্থ আশীর্বাদ প্রাপ্ত। দ্বিতীয় শব্দ দাজ্জাল, যার অর্থ ধোঁকাবাজ বা প্রতারক। একত্রে মাসীহ দাজ্জাল অর্থ দাঁড়ায়—”আশীর্বাদ প্রাপ্ত ধোঁকাবাজ।”
দাজ্জালের প্রকৃতি
দাজ্জাল শয়তানের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে। আল্লাহ শয়তানকে সে সময় এমন ক্ষমতা দেবেন, যা সৃষ্টির ইতিহাসে শুধুমাত্র ফেরেশতাদের দেওয়া হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ, ফসল উৎপাদনের মতো ক্ষমতা।
শয়তান এই বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে পৃথিবীতে তার প্রতিনিধি পাঠাবে, যার নাম হবে মাসীহ দাজ্জাল। এই প্রতিনিধি মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে বিভ্রান্ত করবে। শুরুতে সে নিজেকে নবী হিসেবে পরিচিত করবে এবং পরবর্তীতে নিজেকে স্রষ্টা হিসেবে দাবি করবে। তার উদ্দেশ্য হবে মানুষকে শয়তানের অনুসারী বানানো।
মাসীহ দাজ্জালের প্রকৃত বিষয়
মাসীহ দাজ্জাল বিষয়টি মূলত দুটি দিকের সমন্বয়ে গঠিত:
১. শয়তানের প্রতারণার ক্ষমতা—শয়তানের দাজ্জাল রূপ।
২. শয়তানের প্রতিনিধি হিসেবে মাসীহ দাজ্জাল—মানুষকে বিভ্রান্ত ও প্রতারণার মাধ্যমে সঠিক পথ থেকে সরিয়ে নেওয়া।
মাসীহ দাজ্জালের বৈশিষ্ট্য
মাসীহ দাজ্জাল হবে আদম সন্তানের মধ্য থেকে একজন, যাকে শয়তান বিশেষ ক্ষমতায় আশীর্বাদ দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সম্পর্কে সতর্ক করে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন, যেন ঈমানদাররা তাকে চিনে প্রতারণার শিকার না হয়।
তার শারীরিক বৈশিষ্ট্য
১. বয়স ও রং:
- যুবক বয়সে থাকবে।
- গায়ের রং সাদা ও লালচে।
- লম্বায় খাটো।
২. চুল ও মুখমণ্ডল:
- ঘন ও কোঁকড়ানো চুল।
- চওড়া কপাল।
- বুকের উপরের অংশ প্রশস্ত।
- চোখ:ডান চোখ ত্রুটিযুক্ত হবে, যা দেখতে ভাসমান আঙুরের মতো।দুই চোখের মাঝখানে তার কাফের হওয়া স্পষ্ট চিহ্নিত থাকবে। এই চিহ্ন আল্লাহর উপরে বিশ্বাসী শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকলেই বুঝতে পারবে।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য
১. সন্তানহীনতা:
সে বন্ধ্যা হবে, তার কোনো সন্তান থাকবে না।
২. প্রভাবশালী চেহারা:
এমন চেহারা ও আচরণে থাকবে, যা সাধারণ মানুষের ওপর সহজেই প্রভাব ফেলবে।
মাসীহ দাজ্জালের বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত হাদিসসমূহ
মাসীহ দাজ্জাল সম্পর্কে বহু হাদিসে তার বৈশিষ্ট্য এবং চিহ্নগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে প্রাসঙ্গিক হাদিসগুলোর সারমর্ম তুলে ধরা হলো, যাতে ঈমানদাররা সহজেই তাকে চিনতে পারে।
১. দাজ্জালের চেহারা ও গঠন
- দাজ্জালের গায়ের রং হবে লালচে সাদা।
- সে খাটো হবে এবং তার শরীর হবে মোটা।
- মাথার চুল কোঁকড়ানো এবং ঘন হবে।
- চোখ নিয়ে তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য:ডান চোখ হবে অন্ধ, যা দেখতে ভাসমান আঙুরের মতো।বাম চোখও ত্রুটিযুক্ত হবে এবং মোটা চামড়ার ভাঁজে ঢাকা থাকবে।তার দুই চোখের মাঝখানে “কাফির” শব্দটি লেখা থাকবে, যা সকল মুমিন, শিক্ষিত বা অশিক্ষিত, পড়তে পারবে।সে বন্ধ্যা হবে, তার কোনো সন্তান থাকবে না।
(হাদিস সূত্র: সহীহ বুখারি, সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
২. নবীদের সতর্কবাণী
- প্রতিটি নবী তার উম্মতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
- দাজ্জাল নিজেকে প্রথমে নবী এবং পরে আল্লাহ বলে দাবি করবে।
(হাদিস সূত্র: সহীহ বুখারি, সহীহ মুসলিম)
৩. দাজ্জালের প্রতারণার ক্ষমতা
দাজ্জাল শয়তানের ক্ষমতা দ্বারা এমন সব অলৌকিক কাজ করবে, যা মানুষকে ধোঁকায় ফেলবে।আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরানো।জমি থেকে ফসল উৎপাদন করা।তার দাবি থাকবে, সে সৃষ্টিকর্তা।
(হাদিস সূত্র: সহীহ বুখারি, সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
৪. উভয় চোখের অবস্থা
- কিছু হাদিসে তার ডান চোখকে অন্ধ বলা হয়েছে, আবার কিছু হাদিসে তার বাম চোখকে ত্রুটিযুক্ত বলা হয়েছে।
- উভয় বর্ণনা সঠিক; তার এক চোখ পুরোপুরি অন্ধ এবং অন্যটি ত্রুটিযুক্ত হবে।
(কাদি আইয়াদ এবং আলেমদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী)
৫. শারীরিক গঠন ও প্রভাব
- তার মাথা বড় এবং দেহ ন্যুব্জ হবে।
- বুকের উপরের অংশ প্রশস্ত।
(হাদিস সূত্র: মুসনাদে আহমদ)
৬. বিশেষ চিহ্ন
- তার ডান চোখের অন্ধত্ব এবং দুই চোখের মাঝে লেখা “কাফির” শব্দটি তার পরিচয় দেবে।
- এটি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তি বুঝতে পারবে।
(হাদিস সূত্র: সহীহ মুসলিম, সহীহ বুখারি)
হাদিসে বর্ণিত মাসীহ দাজ্জালের বৈশিষ্ট্যের সারাংশ
দাজ্জালের শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং তার প্রতারণামূলক ক্ষমতা ঈমানদারদের জন্য একটি পরীক্ষা। নবীজির (সা.) বর্ণিত চিহ্নগুলো দেখে ঈমানদাররা তাকে চিনতে পারবে এবং তার ধোঁকায় পড়া থেকে রক্ষা পাবে।
কোন জায়গা থেকে মাসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব হবে?
দাজ্জালের আবির্ভাব ও ইহুদিদের সম্পৃক্ততা
দাজ্জালের আবির্ভাব ইহুদিদের মধ্য থেকে হবে, এবং তার অনুসারীদের অধিকাংশই ইহুদি সম্প্রদায়ের লোক হবে। বিভিন্ন হাদিস ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তার প্রকাশ ইরানের ইস্পাহান শহর এবং ইসরাইলের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
১. ইহুদিদের মধ্য থেকে দাজ্জালের আবির্ভাব
- দাজ্জাল ইহুদিদের মধ্যে থেকে আত্মপ্রকাশ করবে।
- মক্কার পূর্ব দিকে অবস্থিত ইরানের ইস্পাহান শহরকে তার আবির্ভাবস্থল হিসেবে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
- ফাতেমা বিনতে কায়েস (রাঃ) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “সে পূর্ব দিকে রয়েছে”—এ কথা তিনবার পুনরাবৃত্তি করেন এবং পূর্ব দিকে ইশারাও করেন।
(হাদিস সূত্র: মুসলিম শরীফ)
২. ইস্পাহান শহরের ইহুদিদের ভূমিকা
- ইস্পাহান শহর আদি যুগ থেকেই ইহুদিদের বসবাসের কেন্দ্র ছিল।
- প্রাচীনকালে অ্যাসিরিয়ান ও ব্যাবিলনীয় রাজারা ইহুদিদের জেরুজালেম থেকে বন্দী করে ইস্পাহানে নিয়ে আসত।
- পার্সিয়ান সভ্যতার সাথে মিশে গিয়ে তারা ইস্পাহানে একটি বড় ইহুদি জনগোষ্ঠী গড়ে তোলে।
- ১৯৪৮ সালে ইরানে ইহুদিদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১,৫০,০০০। ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের পর অনেক ইহুদি ইসরাইলে পাড়ি জমায়। বর্তমানে ইরানে ইহুদি জনসংখ্যা কমে মাত্র ৮,৫০০-তে নেমে এসেছে, যেখানে ইসরাইলে ইরানি ইহুদিদের সংখ্যা ২,৫০,০০০।
(তথ্যসূত্র: ঐতিহাসিক দলিল)
৩. ইসরাইল এবং দাজ্জালের সম্পর্ক
- বর্তমানে ইহুদিদের আধুনিক রাষ্ট্র ইসরাইলকে দাজ্জালের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত বলে মনে করা হয়।
- হাদিসে দাজ্জালের হত্যার স্থান হিসেবে “লুদ” শহরের কথা বলা হয়েছে, যা আজকের ইসরাইলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।
(হাদিস সূত্র: মুসলিম শরীফ)
৪. কেয়ামতের আলামত ও দাজ্জালের প্রকাশ
- রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণিত ছোট কেয়ামতের আলামতগুলো ইতোমধ্যেই প্রকাশিত।
- বড় আলামতগুলোর মধ্যে অন্যতম হল দাজ্জালের আবির্ভাব।
- বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতায়, ইসরাইল দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের জন্য একটি সম্ভাব্য কেন্দ্রস্থল।
দাজ্জালের প্রকাশ ইসরাইলের ইহুদি জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে ঘটবে। তার প্রধান অনুসারী হবে ইহুদিরা, এবং ইরানের ইস্পাহান শহরের ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার সংযোগ থাকতে পারে। কেয়ামতের বড় আলামতগুলোর একটি হিসেবে দাজ্জালের আবির্ভাবকে মুসলমানরা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করে।
দাজ্জালের সময়কাল
দাজ্জালের পৃথিবীতে অবস্থানকাল
হাদিসে দাজ্জালের পৃথিবীতে অবস্থানকাল নির্দিষ্টভাবে ৪০ দিন বলা হয়েছে, তবে এই সময়কালটি মানব গণনায় একভাবে নয়, বরং তার গতির প্রেক্ষিতে বিভিন্নভাবে হিসাব করা হবে।
১. প্রথমদিকে সময়ের দৈর্ঘ্য
- দাজ্জালের প্রথম দিনের সময়কাল মানুষের গণনায় একটি সাধারণ দিন হবে না। বরং, তা ১ বছরের সমান হবে।
- হাদিসে বলা হয়েছে, প্রথম দিনে তার সময়কাল একটি বছরের মতো দীর্ঘ হবে।
- রাসুল (সঃ) এই সময়ের দৈর্ঘ্য বুঝাতে সালাতের হিসাব দিয়েছেন। অর্থাৎ, দাজ্জালের প্রথম দিনে ১ বছরের সমান সালাত গণনা হবে।
২. দ্বিতীয় দিনের সময়কাল
- পরবর্তী দ্বিতীয় দিনটি মানুষের গণনায় ১ মাসের সমান হবে।
- এটি নির্দেশ করে যে, দাজ্জালের পরবর্তী দিনটি মানুষের সাধারণ দিনের তুলনায় অনেক দীর্ঘ হবে, তবে তার দৈর্ঘ্য কমে আসবে।
৩. তৃতীয় দিনের সময়কাল
- তৃতীয় দিনটি ১ সপ্তাহের সমান হবে।
- এই সময়কালও মানুষের গণনায় অস্বাভাবিক দীর্ঘ মনে হবে, তবে এটি একটি স্বাভাবিক সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেশি।
৪. পরবর্তীকালের সাধারণ দিনগুলো
- বাকি দিনগুলো সাধারণ মানুষের গণনায় হবে, অর্থাৎ, মানুষ যেভাবে সময় গণনা করে, তেমনি দাজ্জালের পৃথিবীতে অবস্থানকালও সেইভাবে হিসাব হবে।
৫. দাজ্জালের আবির্ভাবের প্রক্রিয়া
- প্রথমে, দাজ্জালের মুক্তি হবে এবং সে পৃথিবীতে আসবে।
- তার প্রথম অবস্থানকাল বছরের পর বছর হবে, কিন্তু ধীরে ধীরে সময়কাল কমতে শুরু করবে।
- শেষে, তার মানব প্রতিনিধি মাসীহ দাজ্জাল হয়ে পৃথিবীতে প্রকাশিত হবে।
- এই সময়ের পর থেকে, পৃথিবীর সাধারণ সময়কাল অনুযায়ী দিনগুলো গণনা হবে।
দাজ্জালের পৃথিবীতে অবস্থানকাল শুরুতে অস্বাভাবিক দীর্ঘ, পরে সেটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। প্রথম তিন দিন ১ বছর, ১ মাস, এবং ১ সপ্তাহের সমান হবে, এবং শেষে তার অবস্থান পৃথিবীতে সাধারণ গণনায় পরিণত হবে।
দাজ্জালের ফিতনাসমূহ
দাজ্জালের আবির্ভাব ও তার ফিতনা হবে আদম (আঃ) থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ফিতনা। তার অলৌকিক শক্তি ও বিস্ময়কর কাজগুলো মানুষকে প্রলুব্ধ করবে। তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে, তবে তার জান্নাত আসলে জান্নাতের চেহারায় জাহান্নাম এবং তার জাহান্নাম আসলে জান্নাতের অংশ হবে। এর মাধ্যমে সে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে।
দাজ্জালের অলৌকিক ক্ষমতা
দাজ্জাল তার যাদুকরি শক্তি দিয়ে পৃথিবীকে প্রভাবিত করবে, যেমন:
জান্নাত ও জাহান্নাম: দাজ্জালের সাথে থাকবে দুটি নদী – একটি সাদা পানি ও অন্যটি আগুনের মতো দেখতে। তবে, যে নদী আগুনের মতো মনে হবে, সেটি আসলে ঠাণ্ডা পানি হবে।
হাদিস: হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“দাজ্জালের সাথে দুটি নদী থাকবে: একটি সাদা পানি এবং অপরটি আগুনের মতো মনে হবে, তবে এটি আসলে ঠাণ্ডা পানি হবে।” [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১০১]ধন-সম্পদ ও ফসল: দাজ্জাল পৃথিবীকে তার ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করবে। সে পৃথিবীকে নির্দেশ দেবে ফল-মূল, শাক-সবজি ও ফসল উৎপাদন করতে এবং তা হবে।
বৃষ্টি ও মেঘের নিয়ন্ত্রণ: দাজ্জাল আকাশকে আদেশ দিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করাবে এবং পৃথিবীকে আদেশ দিয়ে বিভিন্ন ফসল উৎপন্ন করবে। তার এই অলৌকিক শক্তি পৃথিবীকে তার শাসনের অধীনে রাখবে।
গবাদি পশুদের উন্নতি: যারা তার অনুসারী হবে, তাদের গবাদি পশুদের অবস্থান উন্নত হবে। পশুগুলো আগের তুলনায় অধিক লম্বা, স্বাস্থ্যবান এবং ভাল অবস্থায় ফিরে আসবে।
দাজ্জাল এবং তার সাথে সম্পর্কিত অলৌকিক ঘটনা
যুবকের পুনরুজ্জীবন: দাজ্জাল একটি যুবককে হত্যা করবে এবং পরে তাকে জীবিত করে দেখাবে। এই ঘটনা ঘটানোর পর যুবকটি বলবে, “আজকের মতো দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলাম না,” এবং দাজ্জালের ক্ষমতা সম্পর্কে তার বিশ্বাস দৃঢ় হবে।
হাদিস: নাওয়াস ইবনু সামআন (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“দাজ্জাল এক যুবককে হত্যা করে পুনরায় তাকে জীবিত করবে। যুবকটি বলবে, ‘আজকের মতো দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলাম না।'” [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১০৬]ধন-সম্পদ বের করা: দাজ্জাল এক পতিত স্থানে যাবে এবং সেখান থেকে ধন-সম্পদ বের করার আদেশ দিবে, যা পৃথিবী থেকে বের হয়ে আসবে।
দাজ্জালের বিরুদ্ধে সতর্কতা
রাসুল (সঃ) তার উম্মতকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করতে বহু সতর্কতা দিয়েছেন। তার নির্দেশনায় উম্মতকে এই ফিতনার বিরুদ্ধে সাবধান থাকতে বলেছেন, যা কিয়ামত আসার পূর্বে সর্ববৃহৎ ফিতনা হবে। মুহাম্মাদ (সঃ) একমাত্র নবি যিনি তার উম্মতকে অধিক সতর্ক করেছেন।
হাদিস:
“প্রত্যেক নবি তার উম্মতকে একচোখা দাজ্জালের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন, কিন্তু মুহাম্মাদ (সঃ) একমাত্র নবি যিনি তার উম্মতকে এই ফিতনার ব্যাপারে অধিক সতর্ক করেছেন।”
দাজ্জালের শেষের পূর্বে
এভাবে দাজ্জালের শক্তি ও তার অলৌকিক কাজগুলো মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। তবে, শেষ পর্যন্ত তার কেয়ামতের আলামত হিসেবে দাজ্জালের পরাজয় হবে এবং তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে।
দাজ্জালের ফিতনাসমূহ
দাজ্জালের আবির্ভাব ও তার ফিতনা হবে আদম (আঃ) থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ফিতনা। তার অলৌকিক শক্তি ও বিস্ময়কর কাজগুলো মানুষকে প্রলুব্ধ করবে। তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে, তবে তার জান্নাত আসলে জান্নাতের চেহারায় জাহান্নাম এবং তার জাহান্নাম আসলে জান্নাতের অংশ হবে। এর মাধ্যমে সে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে।
দাজ্জালের অলৌকিক ক্ষমতা
দাজ্জাল তার যাদুকরি শক্তি দিয়ে পৃথিবীকে প্রভাবিত করবে, যেমন:
জান্নাত ও জাহান্নাম: দাজ্জালের সাথে থাকবে দুটি নদী – একটি সাদা পানি ও অন্যটি আগুনের মতো দেখতে। তবে, যে নদী আগুনের মতো মনে হবে, সেটি আসলে ঠাণ্ডা পানি হবে।
হাদিস: হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“দাজ্জালের সাথে দুটি নদী থাকবে: একটি সাদা পানি এবং অপরটি আগুনের মতো মনে হবে, তবে এটি আসলে ঠাণ্ডা পানি হবে।” [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১০১]ধন-সম্পদ ও ফসল: দাজ্জাল পৃথিবীকে তার ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করবে। সে পৃথিবীকে নির্দেশ দেবে ফল-মূল, শাক-সবজি ও ফসল উৎপাদন করতে এবং তা হবে।
বৃষ্টি ও মেঘের নিয়ন্ত্রণ: দাজ্জাল আকাশকে আদেশ দিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করাবে এবং পৃথিবীকে আদেশ দিয়ে বিভিন্ন ফসল উৎপন্ন করবে। তার এই অলৌকিক শক্তি পৃথিবীকে তার শাসনের অধীনে রাখবে।
গবাদি পশুদের উন্নতি: যারা তার অনুসারী হবে, তাদের গবাদি পশুদের অবস্থান উন্নত হবে। পশুগুলো আগের তুলনায় অধিক লম্বা, স্বাস্থ্যবান এবং ভাল অবস্থায় ফিরে আসবে।
দাজ্জাল এবং তার সাথে সম্পর্কিত অলৌকিক ঘটনা
যুবকের পুনরুজ্জীবন: দাজ্জাল একটি যুবককে হত্যা করবে এবং পরে তাকে জীবিত করে দেখাবে। এই ঘটনা ঘটানোর পর যুবকটি বলবে, “আজকের মতো দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলাম না,” এবং দাজ্জালের ক্ষমতা সম্পর্কে তার বিশ্বাস দৃঢ় হবে।
হাদিস: নাওয়াস ইবনু সামআন (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“দাজ্জাল এক যুবককে হত্যা করে পুনরায় তাকে জীবিত করবে। যুবকটি বলবে, ‘আজকের মতো দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলাম না।'” [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১০৬]ধন-সম্পদ বের করা: দাজ্জাল এক পতিত স্থানে যাবে এবং সেখান থেকে ধন-সম্পদ বের করার আদেশ দিবে, যা পৃথিবী থেকে বের হয়ে আসবে।
দাজ্জালের বিরুদ্ধে সতর্কতা
রাসুল (সঃ) তার উম্মতকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করতে বহু সতর্কতা দিয়েছেন। তার নির্দেশনায় উম্মতকে এই ফিতনার বিরুদ্ধে সাবধান থাকতে বলেছেন, যা কিয়ামত আসার পূর্বে সর্ববৃহৎ ফিতনা হবে। মুহাম্মাদ (সঃ) একমাত্র নবি যিনি তার উম্মতকে অধিক সতর্ক করেছেন।
হাদিস:
“প্রত্যেক নবি তার উম্মতকে একচোখা দাজ্জালের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন, কিন্তু মুহাম্মাদ (সঃ) একমাত্র নবি যিনি তার উম্মতকে এই ফিতনার ব্যাপারে অধিক সতর্ক করেছেন।”
দাজ্জালের শেষের পূর্বে
এভাবে দাজ্জালের শক্তি ও তার অলৌকিক কাজগুলো মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। তবে, শেষ পর্যন্ত তার কেয়ামতের আলামত হিসেবে দাজ্জালের পরাজয় হবে এবং তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে।
দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করার রাসূল (সঃ)-এর নির্দেশিকা
রাসূল (সঃ) তার উম্মতকে দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা থেকে রক্ষা পেতে যে নির্দেশিকা দিয়েছেন তা আমাদের জন্য একটি মুল্যবান শিক্ষা। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা উল্লেখ করা হল:
১. ইচ্ছুককে মেনে চলা ও সঠিক বিশ্বাস রাখা
দাজ্জাল এক সাধারণ মানুষ হবে, যে খাবে এবং পান করবে, তবে আল্লাহ তার কাছে অতি মহান। আল্লাহর নাম ও গুণাবলী রপ্ত করা এবং বিশ্বাসের মৌলিকত্ব রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাজ্জাল যখন আবির্ভূত হবে, তখন সবাই তাকে দেখতে পাবে—ঈমানদার বা কাফের, সকলেই তাকে দেখতে পারবে।
২. আল্লাহর কাছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা চাওয়া
রাসূল (সঃ) সালাতে বিশেষ দু’আ করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উম্মুল মুমেনিন আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সঃ) বলেছেন:
দু’আ:
“اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ”
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে জাহান্নাম ও কবরের আযাব, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা এবং দাজ্জালের ফিতনার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৩. সূরা কাহফের আয়াত মুখস্ত করা
দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পেতে রাসূল (সঃ) সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। এটি দাজ্জালের বিপদ থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে।
হাদিস:
নাওয়াস ইবনু সামআন (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“তোমাদের যে কেউ দাজ্জালের সময়কাল পাবে, সে যেন সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পাঠ করে।” [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৩]
এছাড়া, আবূ দারদা (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে:
“যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে।” [সহীহ মুসলিম]
এ সূরাটি মহান আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কিত, এবং এই সূরার আয়াতগুলি পড়া বা মুখস্ত করা দাজ্জালের প্রভাব থেকে বাঁচাবে।
৪. দাজ্জাল হতে পলায়ন করা ও দূরে থাকা
দাজ্জালের আবির্ভাব হলে তার থেকে দূরে থাকা বা এমন স্থানে থাকা, যেখানে সে প্রবেশ করতে পারবে না, সেটি সবচেয়ে উত্তম। যেমন—মক্কা ও মদীনা।
হাদিস:
ইমরান ইব্ন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি দাজ্জালের খবর শুনবে, সে যেন তার থেকে দূরে থাকে। আল্লাহর শপথ! একজন ব্যক্তি তার কাছে যাবে, নিজেকে ঈমানদার মনে করে, কিন্তু সে দাজ্জালের অনুসারী হয়ে যাবে তার অলৌকিকতার ধুম্রজালে পড়ে।” [সহীহ মুসলিম]
দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
এই নির্দেশিকা অনুসরণ করলে, একজন মুসলিম দাজ্জালের ফিতনার থেকে নিরাপদ থাকতে পারে। মুসলমানদের উচিত এসব উপায় অনুসরণ করা, বিশেষ করে সূরা কাহফ পাঠ করা এবং আল্লাহর কাছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপত্তা চাওয়া।
দাজ্জালের ধ্বংস
দাজ্জাল, এক ভয়ংকর ফিতনা, পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে তার অসংখ্য অনুসারী তৈরি করবে। তার মিথ্যা শক্তি ও অলৌকিক কাজের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করবে এবং ঈমানদারদের ছাড়া অন্য কেউ তার প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না। কিন্তু, সত্যিকার মাসীহ ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) তার হাতেই দাজ্জালের শাস্তি নির্ধারিত হবে।
ঈসা (আঃ) এর আবির্ভাব ও দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
একদিন, ঈসা (আঃ) সিরিয়ার দামেশক নগরীর পূর্ব দিকের সাদা মিনারের উপর অবতরণ করবেন। আল্লাহর সত্যিকারের মুমিন বান্দারা তার চারপাশে সমবেত হবে। ঈসা (আঃ) তাদের সাথে দাজ্জালের দিকে যাত্রা করবেন। দাজ্জাল তখন বায়তুল মাকদিসের (জেরুজালেম) দিকে চলতে থাকবে, কিন্তু ঈসা (আঃ) তাকে ইসরাইলের লুদ (Lod – اللد) শহরের ফটকের কাছে ধরে ফেলবেন।
দাজ্জালের ধ্বংস
ঈসা (আঃ) দাজ্জালকে দেখে তাকে ধরবেন এবং তার ক্ষমতার সমস্ত শক্তি এক নিমিষে বিলীন হয়ে যাবে, যেমন পানিতে লবণ গলে যায়। দাজ্জালের সকল শক্তি শেষ হয়ে যাবে এবং শয়তানেরা তাকে ছেড়ে পালিয়ে যাবে। ঈসা (আঃ) তখন বলেন: “এখন আমার কিছু বোঝাপড়া রয়েছে, যা থেকে বাঁচার কোন উপায় নাই।” এরপর, ঈসা (আঃ) তাকে হত্যা করবেন। তার মৃত্যুর মুহূর্তে, দাজ্জালের অনুসারীরা তাকে ছেড়ে পলায়ন করবে, কিন্তু মুসলিমরা তাদের ধাওয়া করে হত্যা করবে।
চূড়ান্ত শাস্তি ও মুসলিমদের বিজয়
এই ঘটনার মাধ্যমে দাজ্জালের মিথ্যাচারের অবসান ঘটবে এবং পৃথিবী থেকে তার ফিতনা দূর হবে। ঈসা (আঃ)-এর মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, এবং মুসলিমরা তার নেতৃত্বে জয়ী হবে। এই মুহূর্তটি মানব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে চিহ্নিত হবে, যেখানে সত্য ও মিথ্যার চূড়ান্ত সংঘর্ষে সত্য বিজয়ী হবে।
দাজ্জালের মৃত্যু সম্পর্কিত হাদিসসমূহ
১. আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত
রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন:
“আমার উম্মাতের মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং সে চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করবে। আমি জানি না চল্লিশ দিন, না চল্লিশ মাস, না চল্লিশ বছর। এ সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) কে প্রেরণ করবেন। তিনি দাজ্জালকে খোঁজ করে ধ্বংস করে দিবেন।”
(সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৭১১৪)
২. মুজাম্মা ইবন জারিয়া আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত
তিনি বলেন:
“আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছি: ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) দাজ্জালকে লুদ শহরের (বর্তমান ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত) দ্বার প্রান্তে হত্যা করবেন।”
(সূনান তিরমিজী, হাদিস নং ২২৪৭)
৩. ইমাম আহমাদ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
“দাজ্জালের আবির্ভাব এমন সময়ে হবে যখন মানুষের মাঝে ধর্মীয় প্রতিশ্রুতি কম থাকবে এবং জ্ঞান কমে যাবে… তারপর ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) ভোরের আগে অবতরণ করবেন এবং লোকদের ডেকে বলবেন, ‘হে লোকসকল, এই শয়তান মিথ্যাবাদীর বিরুদ্ধে বের হতে কি তোমাদের বাধা দিচ্ছে?’ তারা বলবে, ‘এই লোকটি জিন’। তখন সালাতের সময় হয়ে যাবে, ইকামাত পেইড হবে এবং তাকে বলা হবে, ‘হে আল্লাহর রূহ, সামনে এগিয়ে যান (সালাতে ইমামতির জন্য)’। তিনি বলবেন, ‘তোমাদের ইমাম এগিয়ে যাক এবং তিনি তোমাদেরকে নামায পড়াক।’ তারপর তারা সালাত আদায় সম্পন্ন করে দাজ্জালকে ধরতে বের হবে এবং যখন তারা দাজ্জালকে দেখতে পাবে, তখন সে পানিতে লবণের মতো গলতে শুরু করবে। ঈসা (আঃ) তার কাছে যাবেন এবং তাকে হত্যা করবেন। এসময় গাছপালা, এমনকি পাথরও ডেকে বলবে, ‘হে আল্লাহর রূহ, এখানে একজন ইহুদী!’ যারা তাকে অনুসরণ করেছিল তাদের সবাইকে হত্যা করা হবে, কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।”
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৪৪২৬)