Search
Cart 0.00
0
0
সাবটোটাল: 0.00
No products in the cart.
0
0
সাবটোটাল: 0.00
No products in the cart.
0
0
সাবটোটাল: 0.00
No products in the cart.

ইয়াজুজ ও মাজুজ হলো আদম সন্তানের দুটি বিশাল জাতি, যাদের শেষ সময়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তারা ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে এবং মানবজাতির জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। কুরআন ও সহিহ হাদিসে তাদের নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে। তবে তারা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে এবং তাদের প্রকৃতি কী—এ নিয়ে বহু মতামত ও গবেষণা বিদ্যমান। এই প্রবন্ধে কুরআন, সহিহ হাদিস, এবং পূর্ববর্তী কিতাবের আলোকে ইয়াজুজ-মাজুজের প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে।

সূরা আম্বিয়াতে ইয়াজুজ-মাজুজ

কুরআনের সূরা আম্বিয়ার ৯৫ নম্বর আয়াতে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আয়াতে বলা হয়েছে:
“এটি একটি নিষিদ্ধ জনপদ, যেখান থেকে ইয়াজুজ ও মাজুজ বের হবে এবং দ্রুতগতিতে ছুটে আসবে।”

এ আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায় যে ইয়াজুজ-মাজুজ বর্তমানে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আটক রয়েছে এবং আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া তারা বের হতে পারবে না।

সূরা কাহাফে ইয়াজুজ-মাজুজের দেয়াল

কুরআনের সূরা কাহাফে ধুলকারনাইনের সময় ইয়াজুজ-মাজুজকে একটি দেয়ালের পেছনে আটকে রাখার ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। এই দেয়ালটি তাদের বাইরে আসা থেকে বাধা দেয়। আয়াতে বলা হয়েছে:
“তারা বলল, হে ধুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। আপনি কি তাদের এবং আমাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করবেন?”

ধুলকারনাইন তখন তাদের সহায়তায় একটি শক্তিশালী দেয়াল নির্মাণ করেন যা ইয়াজুজ-মাজুজকে বন্দী করে রাখে।

হাদিসে ইয়াজুজ-মাজুজ

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন এবং তাদের কার্যকলাপের বিবরণ দিয়েছেন। সহিহ বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনা অনুযায়ী, তারা এমন সংখ্যাধিক্যে আসবে যে পানির সব উৎস শুকিয়ে যাবে।

“ইয়াজুজ ও মাজুজ এমন এক জাতি, যাদের সংখ্যা এত বেশি হবে যে তারা পানির উৎসও শুকিয়ে ফেলবে।”

তাদের প্রকৃতি এবং পরিচয়

ইয়াজুজ-মাজুজের প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন তারা সাধারণ মানুষ, আবার কেউ মনে করেন তারা ভিন্নধর্মী শক্তি। তবে সর্বসম্মত মতে, তারা আদম সন্তানের অন্তর্ভুক্ত এবং বিশাল শারীরিক শক্তি এবং ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা নিয়ে আসবে।

ভবিষ্যৎ এবং শেষ সময়ে ভূমিকা

ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব কিয়ামতের বড় আলামতগুলোর একটি। তারা পৃথিবীতে এমন ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে যে মানুষ তাদের মোকাবিলা করতে অক্ষম হয়ে পড়বে। আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাদের ধ্বংস করা হবে।

 

ইয়াজুজ-মাজুজের মৌলিক গঠন এবং প্রকৃতি

ইয়াজুজ ও মাজুজ একটি বিস্তৃত এবং শক্তিশালী জাতি যারা শয়তানের ইচ্ছা ও শক্তির অধীন থেকে কাজ করে। তারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য আবির্ভূত হবে এবং তাদের ধ্বংসযজ্ঞ মানবজাতির জন্য এক বড় পরীক্ষা হবে।

মানুষের পৃথিবীতে আগমন এবং শয়তানের প্রভাব

আদি পিতা আদম (আঃ) এবং মা হাওয়া (আঃ) জান্নাতে অবস্থান করছিলেন। শয়তানের প্রতারণার মাধ্যমে তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করেন এবং পৃথিবীতে প্রেরিত হন। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে শয়তানের প্ররোচনার ফলে মানবজাতির বিপথগামীতার চিত্র ফুটে উঠেছে।

শয়তানের সঙ্গে যারা সম্পূর্ণ একাত্ম হয়ে যায়, তারা শয়তানের দলভুক্ত হয়ে শয়তানের ইচ্ছা বাস্তবায়নে কাজ করে। ইয়াজুজ-মাজুজ হলো এমন এক জাতি, যারা শয়তানের ক্ষমতা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে।

বাইবেল এবং ইসলামী গ্রন্থে ইয়াজুজ-মাজুজ

বাইবেল: নিউ টেস্টামেন্টের “Book of Revelation”-এর ২০তম অধ্যায়ে ইয়াজুজ-মাজুজের উল্লেখ রয়েছে।
৭. হাজার বছরের কারাবাস শেষে শয়তান মুক্তি পাবে।
৮. শয়তান ইয়াজুজ-মাজুজকে প্রতারণা করে যুদ্ধে সমবেত করবে।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাদিসে দাজ্জালের আগমন এবং তার মাধ্যমে ইয়াজুজ-মাজুজের পৃথিবীতে আবির্ভাবের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ)-এর নেতৃত্বে তাদের ধ্বংস করা হবে।

শয়তানের শক্তি ও ইয়াজুজ-মাজুজের ইচ্ছা

মানবজীবনের সকল কর্মকাণ্ডের মূলে রয়েছে দুটি বিষয়: ইচ্ছা এবং শক্তি। এই ইচ্ছা ও শক্তি আল্লাহর নির্দেশের অধীন। তবে যারা শয়তানের দাসত্ব গ্রহণ করে, তাদের ইচ্ছা ও শক্তি শয়তানের অধীন হয়ে পড়ে। ইয়াজুজ-মাজুজ এমন এক শক্তিশালী সম্প্রদায়, যাদের ইচ্ছা ও শক্তি শয়তানের ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

মানুষ এবং শয়তানের ক্ষমতার পার্থক্য:

  • মানুষ সরাসরি হত্যা করতে পারে, কিন্তু শয়তান সরাসরি কাউকে হত্যা করতে পারে না।
  • শয়তান কুমন্ত্রণা দিতে পারে এবং জাদু বা কালো শক্তির মাধ্যমে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে।

ইয়াজুজ-মাজুজের ভূমিকা এবং সীমাবদ্ধতা

ইয়াজুজ-মাজুজ শয়তানের দোসর, যারা শয়তানের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে কাজ করে। তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড কেবল মানবজাতির জন্যই নয়, বরং সমগ্র পৃথিবীর জন্যই বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবে। তবে আল্লাহর নির্দেশে তারা পরাজিত হবে এবং তাদের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী।

সূরা কাহফে ইয়াজুজ-মাজুজের বর্ণনা

ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর ও প্রবেশদ্বার
৬০০ খ্রিস্টপূর্বে জুল কারনাইন নামে পরিচিত এক শাসক ইয়াজুজ-মাজুজের দমন এবং তাদের প্রবেশ পথ বন্ধ করতে একটি শক্তিশালী প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন। এই প্রাচীরটি ইয়াজুজ-মাজুজের পৃথিবীতে প্রবেশের পথে বাধা সৃষ্টি করেছিল, যার ফলে তারা পৃথিবীতে তাদের ইচ্ছা ও শক্তি প্রয়োগ করতে পারেনি।

প্রাচীর ও শয়তানের শক্তি
ইয়াজুজ-মাজুজের প্রবেশদ্বার মানবশক্তির দ্বারা তৈরি হওয়ায় শয়তানের শক্তি দ্বারা এটি ধ্বংস করা সম্ভব নয়। কেবল মানুষের হাতে নির্মিত শক্তি দিয়েই এই প্রাচীর ভাঙা সম্ভব। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর বর্ণিত হাদিসে জানা যায়, ইয়াজুজ-মাজুজ রাতদিন প্রাচীর ভাঙার চেষ্টায় লিপ্ত থাকত। তারা যে পরিমাণ প্রাচীর ভাঙতে পারত, সে অনুপাতে তারা পৃথিবীতে তাদের ইচ্ছা ও শক্তি প্রয়োগ করতে সক্ষম হতো।

ইয়াজুজ-মাজুজের বর্তমান প্রভাব

ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পূর্ণ মুক্ত না হলেও পৃথিবীতে তাদের আংশিক প্রভাব বিদ্যমান। পৃথিবীর বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শয়তানের ক্ষমতার যেসব ইস্যু রয়েছে, সেখানে তাদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। শয়তান তাদের শক্তিকে ব্যবহার করে মানবজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।

আমাদের করণীয়
ইয়াজুজ-মাজুজের প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের আচরণে সতর্ক থাকতে হবে।

  • অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া।
  • ঝগড়া, হিংসা এবং নেতিবাচক মন্তব্য থেকে দূরে থাকা।
  • ভালোবাসা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলা।
  • বিশেষত পরিচিত ব্যক্তি বা ধর্মীয় নেতাদের সম্পর্কে সমালোচনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা।

ইয়াজুজ-মাজুজের মুক্তি ও পৃথিবীতে ধ্বংসযজ্ঞ

ঈসা (আঃ)-এর পুনরাগমনের পর ইয়াজুজ-মাজুজকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি দেয়া হবে। তারা ঈসা (আঃ)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শয়তানের নেতৃত্বে পৃথিবীতে প্রবেশ করবে।

  • পৃথিবীর সকল উচ্চস্থান থেকে তারা আক্রমণ চালাবে।
  • তারা আকাশে তীর ছুঁড়ে ফেরেশতাদের মারার চেষ্টা করবে।
  • আল্লাহর হুকুমে এবং ঈসা (আঃ)-এর দোয়ার ফলে আল্লাহ তাদের এক মুহূর্তেই ধ্বংস করে দেবেন।

 

ইয়াজুজ-মাজুজ: কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিশদ বিশ্লেষণ

১. ইয়াজুজ-মাজুজের সংখ্যা অসীম:
ইয়াজুজ-মাজুজ এমন এক জাতি, যাদের সংখ্যা অবিশ্বাস্যরকম বেশি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনায় জানা যায়, সমস্ত নবীদের জাতি থেকে প্রতি হাজারে একজন জান্নাতি হবে। কিন্তু মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উম্মতের সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবেন। অন্যদিকে, ইয়াজুজ-মাজুজের সংখ্যাধিক্যের কারণে তাদের প্রায় সবাই জাহান্নামে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উম্মতের সংখ্যা হয় ১০০ কোটি, তবে ইয়াজুজ-মাজুজ হবে প্রায় ৯৯৯০ কোটি।
সহীহ বুখারীর একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
আল্লাহ হাশরের দিনে আদম (আঃ)-কে আহ্বান জানাবেন এবং আদেশ করবেন, “জাহান্নামীদের দলকে বের কর।” আদম (আঃ) জিজ্ঞাসা করবেন, “জাহান্নামী দল কারা?” আল্লাহ বলবেন, “প্রতি হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন।” সাহাবাগণ এ কথায় বিচলিত হয়ে বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, তাহলে আমাদের মধ্য থেকে সেই একজন কে?” নবী (সাঃ) তাদের আশ্বস্ত করে বললেন, “তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমাদের মধ্য থেকে একজন জান্নাতে যাবে এবং অবশিষ্ট ৯৯৯ জন ইয়াজুজ-মাজুজের দল থেকে হবে।”
(সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৩১১১)


২. তাদের জলপান ক্ষমতা:
ইয়াজুজ-মাজুজ এত সংখ্যায় বেশি যে, তারা একসাথে আসার সময় বড় বড় জলাধার শুকিয়ে ফেলে। এক হাদিসে উল্লেখ আছে, আল্লাহ ঈসা (আঃ)-কে আদেশ করবেন, “আমার বান্দাদের তুর পাহাড়ে সরিয়ে নাও। কারণ, আমি এমন এক জাতি পাঠাচ্ছি, যাদের সাথে লড়াই করার ক্ষমতা কারও নেই।”
তারা যখন তাবারিয়া লেকের (Sea of Galilee) কাছে পৌঁছাবে, তখন প্রথম দলটি লেকের সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। এরপর যখন তাদের শেষ দল সেখানে পৌঁছাবে, তারা বলবে, “এখানে একসময় হয়তো পানি ছিল।”
(সূনান তিরমিজী, হাদিস নং ২২৪৩)

৩. তাদের ধ্বংস:
ইয়াজুজ-মাজুজ যখন ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, তখন ঈসা (আঃ) ও তার সঙ্গীরা আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। আল্লাহ তাদের গর্দানে একটি বিশেষ রোগ প্রেরণ করবেন, যা তাদের একত্রে ধ্বংস করে দেবে। তাদের মৃত্যুর পর পুরো পৃথিবীতে তাদের মৃতদেহ ও পচনশীল চর্বি ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি, পৃথিবীতে এক বিঘৎ জায়গাও এমন থাকবে না যেখানে তাদের গলিত দেহের অবশিষ্টাংশ পাওয়া যাবে না।
(সূনান তিরমিজী, হাদিস নং ২২৪৩)

ইয়াজুজ-মাজুজের সংখ্যা ও তাদের ভবিষ্যৎ অবস্থান

হাদিস অনুযায়ী, ইয়াজুজ-মাজুজের সংখ্যা চিন্তার বাইরে। তারা মুহাম্মাদ (সঃ)-এর উম্মতের তুলনায় অনেক বেশি হবে। উদাহরণস্বরূপ, হাশরের দিন প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে মাত্র একজন জান্নাতে যাবে। এ প্রসঙ্গে নবীজী (সঃ) বলেছেন:
সূত্র: [সহীহ বুখারী, হাদিস ৩১১১]

ইয়াজুজ-মাজুজ এবং তাবারিয়া লেকের পানি

ইয়াজুজ-মাজুজ তাদের বিশাল সংখ্যায় একসময় তাবারিয়া লেকের সম্পূর্ণ পানি পান করবে। এটি তাদের প্রচণ্ড ক্ষমতা ও সংখ্যাধিক্যের প্রতীক।
সূত্র: [সূনান তিরমিজী, হাদিস ২২৪৩]

ইয়াজুজ-মাজুজের মৃত্যু এবং পৃথিবীর অবস্থা

আল্লাহ তাদের ঘাড়ে পোকার আক্রমণ দিয়ে ধ্বংস করবেন। তাদের মৃতদেহে পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে গলিত চর্বি ও রক্তের দুগন্ধ ছড়িয়ে পড়বে।
সূত্র: [সূনান তিরমিজী, হাদিস ২২৪৩]


ঈসা (আঃ)-এর করণীয়

ইয়াজুজ-মাজুজের সাথে যুদ্ধ করার পরিবর্তে ঈসা (আঃ) এবং তাঁর সঙ্গীদেরকে তূর পাহাড়ে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে।
সূত্র: [সূনান তিরমিজী, হাদিস ২২৪৩]


ইয়াজুজ-মাজুজের শয়তানের মিত্রতা

শয়তানের সহায়তায় ইয়াজুজ-মাজুজ আকাশের দিকে তীর ছুড়বে ফেরেশতাদের আক্রমণ করতে। আল্লাহ এই তীরগুলো রক্তমাখা অবস্থায় ফিরিয়ে দেবেন।
সূত্র: [সূনান তিরমিজী, হাদিস ২২৪৩]

ইয়াজুজ-মাজুজের মৃত্যু

হাদিস অনুযায়ী, ইয়াজুজ-মাজুজের মৃত্যু একজন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর মতো হবে, অর্থাৎ আল্লাহ তাদের মৃত্যুর জন্য একটি ভাইরাস পাঠাবেন যা তাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। এটি শয়তানের শক্তি হিসেবে বর্ণিত হয়, যা পৃথিবীর সব মানুষের মধ্যে প্রবাহিত। কুরআনের আয়াত (সূরা লুকমান ৩১:২৮) থেকে দেখা যায় যে, মানুষের সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একমাত্র প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের মতো।

হাদিস: রাসূল (সঃ) বলেন: ঈসা (আঃ) ও তাঁর সঙ্গীরা আল্লাহর কাছে মিনতি জানাবেন। আল্লাহ তাদের গর্দানে এক প্রকার পোকা প্রেরণ করবেন, যার মাধ্যমে তারা মৃত্যুবরণ করবেন। এরপর ঈসা (আঃ) ও তার সঙ্গীরা পাহাড় থেকে নেমে আসবেন, কিন্তু পৃথিবী এমন কোনো জায়গা খুঁজে পাবেন না যেখানে ইয়াজুজ-মাজুজের মৃতদেহের গন্ধ না ছড়ায়। আল্লাহ পরবর্তীতে একটি বিশেষ পাখি পাঠাবেন, যা তাদের মৃতদেহগুলো গর্তে ফেলে দেবে। মুসলিমরা তাদের ধনুক, তীর এবং তুলী সাত বছর পর্যন্ত ব্যবহার করবে। এরপর আল্লাহ প্রবল বৃষ্টি করবেন, যা পৃথিবীকে ধৌত করে একটি পরিষ্কার আয়না মত করে দেবে।

সূত্র: [সূনান তিরমিজী, হাদিস ২২৪৩]


ইয়াজুজ-মাজুজের অবস্থান

কুরআন ও হাদিসে ইয়াজুজ-মাজুজের পৃথিবীর উপরে অবস্থানের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি, তবে কিছু ভাবনা রয়েছে:

ভাবনা ১: রাসূল (সঃ) বলেন, দাজ্জালের জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে। এটি পৃথিবী থেকে উপরে থাকতে পারে, সুতরাং ইয়াজুজ-মাজুজ সেখানে অবস্থান করতে পারে।

হাদিস: হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সঃ) বলেন: দাজ্জালের বাম চোখ কানা হবে, তার শরীরের চুল ঘন হবে এবং তার কাছে জান্নাত ও জাহান্নাম থাকবে। তাঁর জান্নাত আসলে জাহান্নাম হবে এবং তাঁর জাহান্নাম জান্নাত হবে।

সূত্র: [সহীহ মুসলিম, হাদিস ৭১০০]

ভাবনা ২: সূরা আত-তালাক (৬৫:১২) অনুযায়ী, আল্লাহ সাত আসমান ও পৃথিবীর সাত স্তরের সৃষ্টি করেছেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, ইয়াজুজ-মাজুজ সম্ভবত পৃথিবীর উপরের কোনো স্তরে অবস্থান করতে পারে।

কুরআন: “তিনি আল্লাহ্‌, যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং অনুরূপ যমীন, তাদের মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কাস্টমার ফর্ম ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার